শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:১২ পূর্বাহ্ন
কালিয়াকৈর প্রতিনিধি::
গাজীপুরের কালিয়াকৈর আশাপুর এলাকায় অন্ধ জালাল উদ্দিন কোন প্রকার ভাতা পাননি। পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে ঘুরে বাদাম বিক্রি করে চলে তার সংসার। তবু মানুষ কাছে হাত পাতেন নি।
এলাকাবাসী ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার ঢালজোড়া ইউনিয়নের আশাপুর গ্রামের তালেব আলী ছেলে জালাল উদ্দিন (৫৫) জন্মের সাত বছর পর বসন্ত রোগ হয়। এই রোগের আর্থিক অবস্থা ভাল না থাকায় চিকিৎসা নিতে পারে নাই। তাকে রোগে আক্রান্ত করার তিন মাস পর তাকে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের কুমুদিনী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে জানায় দুই চোখ অন্ধ হয়ে গেছে। পরে তার পিতা মাতা লালন পালন করেন। সে ২২ বছর পর টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর এলাকায় বিয়ে করেন মরিয়ম বেগম কে। পরে সেখানে তিন মেয়ে এক ছেলে জন্ম হয়। তারপর তার স্ত্রী মরিয়ম মারা যান। এই তিন মেয়েকে বিয়ে দেন পাড়ায় পড়ায় বাদাম চানাচুর ও কসমেটিকসের জিনিস বিক্রি করে। ছেলেকে বিয়ে করান এতে ও তার সুখ সইলো না কিছু দিন পর সেই ছেলে তার থেকে আলাদা হয়ে যায়। পরে আবার দ্বিতীয় বিয়ে করেন শারীরীক প্রতিবন্ধী লাইলী বেগমকে সেখানে এক ছেলে জন্ম হয়। সে যখন পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে বিভিন্ন মাল বিক্রি করতো সেখানে তার ছেলে মেয়ে আবার স্ত্রী সহয়োগিতা করতো। কারও কাছে হাত পাতেনি। জীবন মরন যুদ্ধ করে চলছে তার সংসার চেয়ারম্যান মেম্বারদের ও সরকারের কোন সহযোগিতাও পাননি।
ভামনঘোনা এলাকার নজরুল ইসলাম জানান, আমরা চল্লিশ বছর যাবত দেখছি পাড়ায় পড়ায় ঘুরে বিভিন্ন প্রকার জিনিস বিক্রি করতো। কিন্তু কাহার কাছে কোন হাত পততো না। নিজে আয় করে সংসার চালাতো। তবে কোন চেয়ারম্যান ও মেম্বার কাছ থেকে ভাতা পাননি। সরকারে সহযোগিতা পেলে একটু ভাল ভাবে সংসার চলতো।
তার দ্বিতীয় স্ত্রী লাইলী বেগম জানান, আমার স্বামী ৭ বছর বয়সে বসন্ত রোগে দুইটি চোখ অন্ধ হয়ে যায়। অন্ধ স্বামীকে নিয়ে চেয়ারম্যান মেম্বার এর কাছে গিয়ে ও কোন লাভ হয়নি। তারা কোন ভাতার ব্যবস্থা করে দেননি।
ঢালজোড়া ইউনিয়রে চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান জানান, অন্ধ জালাল ভাতা পান কিনা আমার জানা নেই। তবে সে আমার কাছে কোন দিন আসে নাই। এ বিষয় সমাজ কল্যাণ অফিসার ভাল বলতে পারবে।
কালিয়াকৈর উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার মইনুল হাসান জানান, ভাতা পান কি না আমার জানা নেই। তবে আইডি কার্ড নিয়ে আসলে ভাতার ব্যবস্থা করে দিব।
কালিয়াকৈর উপজেলার নিবার্হী কর্মকর্তা মোঃ হাফিজুল আমিন জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে আমার কাছে আসলে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।